হেডলাইনঃ
হেডলাইনঃ
সুনামগঞ্জের যাদুকাটায় টুকেরবাজার নৌ-পুলিশের অভিযানে বালুবোঝাই নৌকাসহ ২ জন আটক বগুড়া আদমদীঘিতে ট্রেনে কাটা পরে নি*হত । বিএডিসি খামারে আউশ ধানের বীজ তৈরি ও রোপনে ব্যস্ত কৃষকেরা জগন্নাথপুরে পাঁচ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা বিদ্যুৎ অফিসের সামনে সুনামগঞ্জ বিএনপির অবস্থান কর্মসূচি ও স্মারকলিপি প্রদান বগুড়া আদমদীঘিতে পুষ্টি ও পরিবেশ সচেতনতা বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত উলিপুরে টি-বাঁধ নির্মাণ,জ‌মি অ‌ধিগ্রহণের দাবীতে সংবাদ সম্মেলন জগন্নাথপুরে মাছের আকাল, পানি শূন্য নলুয়ার হাওর জগন্নাথপুরে কৃষকদের মধ্যে বিনামূল্যে সার বিতরণ নিষিদ্ধ পলিথিনে জগন্নাথপুর সয়লাব, দুষিত হচ্ছে পরিবেশ

মোকার আঘাতের ঝুঁকির মুখে রোহিঙ্গা ক্যাম্পসহ কক্সবাজার অঞ্চল

অনলাইন ডেস্ক ঃ / ৪৮ Time View
Update : বৃহস্পতিবার, ১১ মে, ২০২৩, ৭:৩৫ পূর্বাহ্ন
  • Print
  • শক্তি বাড়িয়ে চলছে ঘূর্ণিঝড় মোকা। ‘সুপার সাইক্লোন’ মোকার আঘাতের ঝুঁকির মুখে রোহিঙ্গা ক্যাম্পসহ কক্সবাজার অঞ্চল। ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ২২০ কিলোমিটার বেগে আগামী রবিবার সকাল থেকে সোমবার সকালের মধ্যে ২৪ ঘণ্টা ধরে ‘মোকা’র তাণ্ডবরূপ দেখা যাবে। এমনটাই জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. এনামুর রহমান। ভয়ংকর ঘূর্ণিঝড় মোকা মোকাবিলায় নেয়া হচ্ছে প্রস্তুতি। সিপিপিকে (ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি) সতর্কবার্তা প্রচার করছে। উপকূলীয় জেলায় প্রস্তুত ফায়ার স্টেশন ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

    ঘূর্ণিঝড়টির সম্ভাব্য গতিপথ বিশ্লেষণ করে আবহাওয়াবিদরা বলেছেন, আজ বৃহস্পতিবার ‘প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে’ রূপ নিচ্ছে ‘মোকা’। তাণ্ডব চালাবে কক্সবাজার ও মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে। রবিবার থেকে টেকনাফ ও সেন্টমার্টিন এলাকাজুড়ে আঘাতের আশঙ্কা থাকলেও গত শনিবার থেকে ‘প্রবল ঘূর্ণিঝড়’ ধীরে ধীরে শক্তি ক্ষয় করতে শুরু করবে বলেও সুখবর দিয়েছে সংশ্লিষ্টরা।

    যা বলছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী : সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় ‘মোকা’র মোকাবিলার প্রস্তুতি নিয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা শেষে ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস ও প্রস্তুতি নিয়ে গতকাল বুধবার সচিবালয়ে প্রেস ব্রিফিং করেন প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান। ‘মোকা’ সুপার সাইক্লোনে রূপ নিতে পারে, এমন আশঙ্কার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, আগামী রবিবার বাংলাদেশের কক্সবাজার উপকূল অতিক্রম করতে পারে। সুস্পষ্ট লঘুচাপটি বৃহস্পতিবার মধ্যে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। ১৩ মে সন্ধ্যা থেকে ১৪ মে সকালের মধ্যে এটা আঘাত হানার পূর্বাভাস পাওয়া গেছে।

    বাংলাদেশ ও ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন দেশের পূর্বাভাস সংস্থার প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখেছি, এটা এখন উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এটি বাংলাদেশের উপকূল থেকে এখনো গড়ে এক হাজার ৫০০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছে। আগামীকাল শুক্রবার এটি উত্তর-পূর্ব দিকে মোড় নেবে। এ সময় বাতাসের গতি ঘণ্টায় ২২০ থেকে ২৩২ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে।

    এনামুর রহমান বলেন, কক্সবাজার জেলা ও মিয়ানমারে এটা আঘাত হানবে। এটা টেকনাফের বর্ডার থেকে একটু দক্ষিণ দিক দিয়ে যাবে। এখন পর্যন্ত এমনটাই পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। আঘাতের সময় এর গতি ১৮০ থেকে ২২০ কিলোমিটার থাকতে পারে। আমরা এসওডি (দুর্যোগবিষয়ক স্থায়ী আদেশাবলি) অনুযায়ী ব্যবস্থা নিচ্ছি। মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলা আক্রান্ত হওয়া কথা পূর্বাভাসে বলা হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে আছে সেন্টমার্টিন ও টেকনাফের নি¤œ এলাকা। পূর্বাভাস অনুযায়ী, ঘূর্ণিঝড়টি আঘাত হানলে রোহিঙ্গাদের বাঁশ, টিন, পলিথিন দিয়ে তৈরি করা বাসস্থান ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা আছে বলেও জানান এনামুর রহমান।

    কত দূরে ‘মোকা’ : গতকাল ভারতীয় আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া অতি গভীর নি¤œচাপ গতকাল সন্ধ্যাবেলা আরো পশ্চিমে সরে গিয়ে সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত

    হতে পারে। তারপরের কয়েক ঘণ্টায় সেটি আরো শক্তি সঞ্চয় করে ‘প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে’ পরিণত হতে পারে বৃহস্পতিবার সকালে। আগামীকাল শুক্রবার সকালের মধ্যে দক্ষিণ-পূর্ব এবং তৎসংলগ্ন মধ্য বঙ্গোপসাগরে সরে গিয়ে ‘মোকা’ পরিণত হতে পারে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে। তবে শনিবার থেকে ঘূর্ণিঝড় ধীরে ধীরে শক্তি ক্ষয় করতে শুরু করবে বলেও মনে করছে ভারতের আবহাওয়া অফিস।
    আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরি?ণত হওয়ার পর একটু একটু করে উত্তর-উত্তরপূর্বে সরে যেতে পারে মোকা। রবিবার দুপুরের দিকে তা কক্সবাজার এবং মিয়ানমারের কাউকপুরের ওপর আঁচড়ে পড়ে দক্ষিণ-পূর্ব বাংলাদেশ এবং উত্তর মিয়ানমার উপকূল অতিক্রম করবে। এ সময় বাংলাদেশ এবং মিয়ানমার উপকূলে সর্বোচ্চ ১২০ থেকে ১৩০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা গতিবেগে আঁচড়ে পড়তে পারে মোকা।

    এদিকে গতকাল দুপুরে দেয়া বিশেষ বুলেটিনে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর ও এর কাছাকাছি এলাকায় অবস্থানরত নি¤œচাপটি ঘনিভূত হয়ে গভীর নি¤œচাপে পরিণত হয়েছে। এটি গতকাল সকাল ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৫৫০ কিলোমিটার দক্ষিণে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৪৭০ কিলোমিটার দক্ষিণে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৫৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্বে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৫০৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্বে অবস্থান করছিল।

    বুলেটিনে আরো জানানো হয়, এটি আরো ঘনিভূত হয়ে আজ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে এবং পরবর্তীতে দিক পরিবর্তন করে ক্রমান্বয়ে উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হতে পারে। গভীর নি¤œচাপ কেন্দ্রের ৪৮ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছে।

    গভীর নিম্নচাপে কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর উত্তাল রয়েছে। এজন্য চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে ১ নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। সেইসঙ্গে তাদের গভীর সাগরে বিচরণ না করতে বলা হয়েছে।

    প্রস্তুত উপকূল : ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় নেয়া হয়েছে পর্যাপ্ত প্রস্তুতি। কৃষকদের পাকা ফসল তুলে নেয়ার জন্য বলা হয়েছে। উপকূলীয় অঞ্চলে প্রস্তুত ফায়ার স্টেশন। প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান বলেন, চট্টগ্রামের যতগুলো উপকূলীয় উপজেলা আছে সেগুলোর আশ্রয়কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত করার জন্য বলেছি। আশ্রয়কেন্দ্রে খাওয়ার জন্য আমরা ১৪ টন ড্রাই কেক ও টোস্ট বিস্কুট পাঠিয়ে দিয়েছি। আগামীকালের মধ্যে আরো ২০০ টন চাল চলে যাবে। আর চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলায় ১০ লাখ করে ২০ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছি আশ্রয় কেন্দ্রগুলো ব্যবস্থাপনার জন্য।

    তবে এখনই আশ্রয়কেন্দ্রে নেয়া হচ্ছে না জানিয়ে তিনি বলেন, ৫, ৬, ৭ নম্বর বিপদসংকেত জারি হলে মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেয়া শুরু হবে। সিপিপিকে সতর্কবার্তা প্রচারের জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আমরা আশা করি, জানমালের ক্ষয়ক্ষতি শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে পারব।

    হাওড়ে শতভাগ ধান কাটা সম্পন্ন হয়েছে। আর সারাদেশে ৬০ ভাগ বোরো ধান কাটা শেষ হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে ঘূর্ণিঝড়ের শঙ্কা তৈরি হওয়ায় সতর্কতামূলক পরামর্শ দিয়েছে কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তর। ফসলের ক্ষতি এড়াতে পাকা ধান, আম ও অন্যান্য ফসল দ্রুত সংগ্রহ করার পরামর্শ দিয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়। এদিকে ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড় মোকা মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছে উপকূলবর্তী জেলাগুলোর ১৪৯টি ফায়ার স্টেশন। সব কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে সর্তক দায়িত্বে রাখা হয়েছে।

    স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগের পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে সতর্কতামূলক পদক্ষেপ। এতে পর্যাপ্ত মেডিকেল টিম প্রস্তুত রাখা, খাবার স্যালাইনসহ জরুরি প্রতিরোধ ও প্রতিষেধক ওষুধ, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট এবং সাপে কামড় দেয়া রোগীর জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক অ্যান্টিভেনম মজুত রাখার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।


    আপনার মতামত লিখুন :

    Leave a Reply

    Your email address will not be published. Required fields are marked *

    More News Of This Category
    এক ক্লিকে বিভাগের খবর
    Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com
    Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com