আমির হোসাইন, স্টাফ রিপোর্টার
সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার ব্রজেন্দ্রগঞ্জ রাম চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ের ২০২৩ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের সংবর্ধনা ও বিদায় অনুষ্ঠান শনিবার (১১ মার্চ) বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
অনুষ্ঠানে স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি আজিজুল হকের সভাপতিত্বে ও সাংবাদিক আমির হোসাইনের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দিরাই উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান গোলাপ মিয়া ও প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উক্ত স্কুলের স্বনামধন্য প্রধান শিক্ষক আশরাফ উদ্দিন।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই পবিত্র কোরআন থেকে তিলাওয়াত করেন বিদায়ী শিক্ষার্থী সোহানা আক্তার এবং গীতা পাঠ করেন আরেক বিদায়ী শিক্ষার্থী প্রিন্স কান্তি সরকার।
অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বিদায়ীদের উদ্দেশ্যে স্নেহা সাহা অত্যন্ত সাবলীল এবং আবেগ তাড়িত বক্তব্য রাখে।
অনুষ্ঠানে বিদায়ী শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে নিহাল,জুই,সোহানা,প্রিন্স, ইমরান,হৃদয়,সূচি,স্বর্ণালি, শ্রাবণী বক্তব্য রাখে। তারা বক্তব্যে বলেন ‘মুছে যাওয়া দিনগুলি আমায় যে পিছু ডাকে, স্মৃতি যেন এ হৃদয়ে বেদনার রঙে রঙে ছবি আঁকে’ শিল্পী হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের বিখ্যাত এই গানের কথাগুলো আজ বারবার মনের মাঝে গুনগুন করছে। আজকের দিনটিতে আমাদের মনে পড়ছে এইতো সেদিন আমরা নবীন ছিলাম। আমাদের বরণ করে নেওয়ার জন্য যেন সাজসাজ রব সে যে উঠেছিল এ প্রাঙ্গন আজও মনে পড়ে সেদিনের কথা যেদিন বুকে একরাশি ভয় আর অজানা অসংখ্য আকাঙ্ক্ষা নিয়ে এ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে প্রবেশের সুযোগ হয়েছিল আমার। বিদ্যালয়ে প্রবেশের পর এই বিশাল মাঠটিকে যেন দৈত্যের ন্যায় মনে হতে লাগলো। এ তথ্য এবং অজানা অনেকগুলো মুখের আড়ালে আমি হয়ে পড়েছিলাম এক অসহায় বালিকা সেই অসহায়ত্বের বাঁধন ছিন্ন করে কখন যে প্রাঙ্গন প্রাণের প্রাঙ্গণে পরিণত হল যেন টেরই পেলাম না। দেখতে দেখতে চোখের আড়ালেই যেন বছরগুলো কেটে গেল। আজ হয়তো আমাদের আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় অনুষ্ঠান। কিন্তু এটি একটি আনুষ্ঠানিকতা মাত্র। কারণ মন থেকে চিরতরে এ বিদ্যালয়ের নাম কখনোই মুছে যাবে না। মুছে যাবে না সেই স্মৃতিগুলো যেগুলো গ্রথিত হয়ে আছে অন্তরের গহীনে। হয়তো আমাদের রঙিন ছবিগুলো একসময় স্কুল থেকে মুছে যাবে, হয়তো চাপা পড়ে যাবে মাঠের ধুলোর আড়ালে কিন্তু যে স্মৃতি অন্তরের গহীনে গ্রথিত হয়ে আছে তা কখনোই ভুলার মত নয়। সবশেষে কবিতার ভাষায় বক্তা তার বক্তব্য শেষ করে, “হয়তো আমারা এই পথে আর হবে না কুয়াশা দুয়ারে যাই রোপন করে বুকের ভালোবাসা।”
প্রধান বক্তার বক্তব্যে প্রধান শিক্ষক আশরাফ উদ্দিন বলেন,ঐতিহ্যবাহী এই প্রতিষ্ঠান তোমাদের পদস্পর্শ একদিন মুখরিত হয়ে উঠেছিল যে পথ একদিন তোমাদের নিয়ে এসেছিল স্কুলের আঙিনায়। আজ সেই পথেই আবার তোমাদের ডাক দিয়েছে হাঁকিছে ভবিষ্যত হও আগুয়ান। তাই আজ বেজে উঠেছে বিদায়ের বেদনার সুর, সেই সুর যেন বলছে ভুবনের ঘাটে ঘাটে ১০ করে দাও অন্য ঘাটে শুভ হোক তোমাদের ভবিষ্যৎ স্কুলে তোমাদের স্মৃতিমধুর অনেকগুলো দিন কেটেছে তোমাদের প্রাণোচ্ছল পদভারে এই ফুলের আঙ্গিনা ছিল মুখরিত অধ্যবসায় নিরলস শ্রম আগ্রহে নিজেদের আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ার সাধনায় তোমরা সর্বদাই সচেষ্ট ছিলে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান গোলাপ মিয়া বলেন, ভবিষ্যতে তোমরা যখন প্রজ্ঞার ছায়া ফেলতে যাচ্ছ তখন বলি স্কুলের স্মৃতিময় দিনগুলো আর প্রিয় শিক্ষক শিক্ষিকাদের ঐকান্তিক অবদানের কথা যেন তোমরা ভুলে না যাও। আমি প্রত্যাশা করি তোমরা সফলভাবে এসএসসি পাস করে বিগত দিনের সুনাম ধরে রাখবে।